ইন্টারভিউতে যে ১২ টি কাজ করবেন না

ইন্টারভিউতে যে ১২ টি কাজ করবেন না - Job Interview Tips

আপনি চাকরির জন্য কখনও ইন্টারভিউ দিয়েছেন? যদি প্রথমবারের মত ইন্টারভিউ দিয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই কিছু না কিছু ভুল হয়ে থাকে। এই আর্টিকেলে ইন্টারভিউয়ে করা 12 টি ভুল সন্মন্ধে আলোচনা করবো।
Job Interview Tips
ইন্টারভিউ হচ্ছে চাকরি পাওয়ার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি পদ্ধতি। সরকারি চাকরি হোক আর বেসরকারি চাকরি হোক যে কোনো চাকরির জন্যই চাকরিদাতারা চাকরিপ্রার্থীর যোগ্যতা যাচাই করার জন্য ইন্টারভিউ নিয়ে থাকে। এই আর্টিকেলে আপনি মোট ১২ টি ইন্টারভিউয়ের সময় করা ভুলের কথা জানতে পারবেন।

১. প্রস্তুতি ছাড়াই ইন্টারভিউ বোর্ডে হাজিরঃ

সরকারি হোক কিংবা বেসরকারি যে কোনো চাকরির জন্য ঐ নির্দিষ্ট কাজ সম্পর্কে পূর্বেই ভালোভাবে জেনে নিতে হবে। কারন, আপনি যে কাজটি করবেন প্রশ্নকর্তারা সেই কাজ সম্পর্কে আপনাকে প্রশ্ন করবেন। সুতরাং আগে প্রস্তুতি না নিলে আপনি তাদের প্রশ্নের ভালো উত্তর দিতে পারবেন না।

২. বেতন সংক্রান্ত প্রশ্নঃ

কিছু কিছু চাকরিপ্রার্থী ইন্টারভিউ বোর্ডে সাধারনতঃ প্রশ্নকর্তাদের সরাসরি প্রতি মাসে কত টাকা বেতন দিবে এটা জিজ্ঞাসা করে থাকেন। ইন্টারভিউয়ের শুরুতেই যদি কোনো চাকরিপ্রার্থী বেতন নিয়ে প্রশ্ন করে তাহলে চাকরিদাতাগণ অসন্তুষ্ট হয়। মূলতঃ চাকরিদাতারা নিজে থেকেই কত টাকা বেতন দেয়া হবে তা জানিয়ে থাকেন। তাই এরকম করা একদমই উচিৎ নয়।

৩. একদমই নার্ভাস হওয়া যাবে নাঃ

ইচ্ছা করে আমরা কেউই নার্ভাস হই না। যদি ইন্টারভিউ বোর্ডে চাকরিপ্রার্থী নার্ভাস হয়ে যায় বা তিনি নিজেই বলে থাকে যে আমি খুবি নার্ভাস, তাহলে বিষয়টা কেমন হতে পারে তা অবশ্যই আপনি বুঝতে পারছেন। এতে চাকরিদাতাদের মাঝে আপনার ব্যাক্তিত্ব সম্পর্কে ফুটে ওঠবে নেতিবাচক মনোভাব। আর এই একটি কারনই আপনার চাকরি না পাওয়ার জন্য যথেষ্ট।

৪. অধৈর্য হওয়া ও ঘড়ি দেখাঃ

যে প্রতিষ্ঠান আপনাকে চাকরি দেবে তারা কিন্তু সঠিক ভাবে যাচাই বাছাই করার পরেই চাকরিতে নিয়োগ করবেন। যার কারনে ইন্টারভিউ কিছুটা দীর্ঘ সময় পর্যন্ত হতে পারে। সেটা কোন কোন ক্ষেত্রে সময় আধঘন্টা থেকে এক ঘন্টা পর্যন্তও হতে পারে। সুতরাং কোনো ভাবে অধৈর্য হওয়া যাবে না ও বারবার ঘড়ি দেখা যাবে না।

৫. কোনো প্রতিষ্ঠানের বদনাম থেকে দূরে থাকুনঃ

অনেক সময় একটি প্রতিষ্ঠান ছেড়ে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরি করার প্রয়োজন হয়। একারনে ইন্টারভিউ বোর্ডে প্রশ্নকর্তারা আগের চাকরিটি ছাড়ার কারণ আপনাকে জিজ্ঞাসা করতে পারে। সুতরাং এমন পরিস্থিতিতে আপনি আপনার পূর্বের প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে কোন ধরনের বিরুপ মন্তব্য করবেন না অথবা অশালীন কোন ধরনের বক্তব্য পেশ করবেন না।

এক্ষেত্রে আপনার করনীয় হলো, আগের চাকরিটি ছেড়ে দেওয়ার কিছু যৌক্তিক কথা বলতে হবে। এরকম কথা না বলে যদি আপনি আগের প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে বিরুপ মন্তব্য করেন তাহলে নিয়োগকর্তারা তাদের চাকরি থেকে আপনাকে দূর করে দেবে।

৬. নিজের গুণগান করাঃ

কারো কারো অভ্যাস থাকে নিজের ভালো গুণ গুলো সামনের জনকে বারবার বলা। যদিও এটা অতোটাও খারাপ কিছু নয়। তবে আপনি যখন কোন প্রতিষ্ঠানের চাকরি করবেন তখন বায়োডাটা বা Resume-এ অবশ্যই আপনার অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার বিষয়গুলো অবশ্যই উল্লেখ করবেন। তাহলে আপনাকে নিজের পারদর্শিতার কথাগুলি নতুন করে বলার দরকার নেই।

৭. একাধিক পদে আবেদন করাঃ

বিভিন্ন কাজে একটু একটু পারদর্শী হওয়ার চেয়ে বর্তমান সময়ে যে কোনো নির্দিষ্ট একটি কাজে বিশেষভাবে পারদর্শী (Expert) হওয়া খুবই দরকার। যার কারণে কোনো প্রতিষ্ঠান একাধিক কাজে পারদর্শী থেকে যেকোনো ধরনের নির্দিষ্ট একটি কাজে পারদর্শী ব্যক্তিকেই নিয়োগ দিয়ে থাকে। সুতরাং কোনো প্রতিষ্ঠানের একাধিক পদে আবেদন করার চেয়ে নির্দিষ্ট একটি পদের জন্য আবেদন করতে হবে এবং তার উপর নির্ভর করেই ইন্টারভিউ দিতে হবে।

৮. পোশাকের উপর নজর দিনঃ

আমরা সকলেই জানি ইন্টারভিউ দিতে গেলে সঠিক পোশাক পরিধান করে যেতে হয়। তথাপিও কোনো কোনো ক্ষেত্রে আমাদের পোশাক নিয়ে ঝামেলা থেকে যায়। একজন ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব অনেক ক্ষেত্রেই তার পোশাকের উপর নির্ভর হয়ে থাকে। সুতরাং ইন্টারভিউ দিতে গেলে সব সময় ফরমাল পোশাক পরিধান করতে হবে। চুলের স্টাইল এবং জুতোর দিকেও বিশেষভাবে নজর দিতে হবে।

৯. সঠিক সময়ে ইন্টারভিউতে উপস্থিত হওয়াঃ

কারো কারো সঠিক সময়ে ইন্টারভিউতে উপস্থিত হতে না পারার একটি সমস্যা থাকে। সুতরাং ইন্টারভিউইয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সবসময় অতিরিক্ত কিছু সময় নিয়ে বাড়ি থেকে রওয়ানা দিতে হবে। কারন সঠিক সময় আপনি যদি উপস্থিত হতে না পারেন তাহলে আপনার ব্যাপারে চাকরিদাতাদের নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হবে। যার কারণে চাকরি পাওয়ার আশার আলো জ্বলার পূর্বেই নিভে যেতে পারে।

১০. মোবাইল বন্ধ রাখাঃ

মোবাইলে মেসেজ আসুক কিংবা কল আসুক, রিংটোন বা ভাইব্রেশন বেজেই থাকে। আপনি ইন্টারভিউ টেবিলের সামনে বসে আছেন আর যদি হঠাৎ করে আপনার ফোনটা ভাইব্রেশন অথবা বেজে উঠে, তাহলে তখনকার পরিস্থিতি কি ধরনের হবে একটু ভেবে দেখুন। সুতরাং মোবাইলকে একদম সাইলেন্ট মোডে রাখতে হবে অথবা বন্ধ রাখতে হবে।

১১. প্রশ্নকর্তার কথার মাঝে কথা বলাঃ

প্রশ্নকর্তা যখন কোনো প্রশ্ন করছে অথবা কিছু বলছে সেই সময়ে একদমই কথা বলা যাবে না। আর যদি এরকম করা হয়, তাহলে ভালোভাবে আপনার কথা না শোনার মানসিকতা ফুটে উঠবে। সুতরাং এই কারনেই আপনার চাকরিটা হাত ছাড়াও হয়ে যেতে পারে। মনে রাখবেন, উত্তর দেওয়ার আগে প্রশ্ন কিংবা কথাটা ভালোভাবে শোনা অত্যান্ত জরুরী।

১২. মাত্রাতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসঃ

ইন্টারভিউ দেওয়ার সময় আপনাকে অবশ্যই আত্মবিশ্বাসী হতে হবে। তবে অতোটাও বেশি না যেন আপনি মাত্রাতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের বশবর্তী হয়ে ভুলভাল কিছু বলে ফেলেন। এতে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। সুতরাং সবসময় নিজের উপর বিশ্বাস বজায় রেখে স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করবেন।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url